JNEWS24TV.COM
জামালপুর প্রতিনিধিঃ
উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে জামালপুরের সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির
অবনতি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে প্রায় দেড় লাখ মানুষ।
জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম জানান, আজ
শনিবার সকাল ১১ টায় দেওয়ানগঞ্জের বাহাদুরাবাদ ঘাট পয়েন্টে যমুনা নদীর
পানি গত ২৪ ঘন্টায় ১ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপদসীমার ৯৩ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ, ইসলামপুর, মেলান্দহ,মাদারগঞ্জ ও সরিষাবাড়ী উপজেলার ৪৫টি ইউনিয়নের দেড় লাখ মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
প্রতিদিনই বন্যার পানিতে প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা, তলিয়ে গেছে ৬ হাজার ৮শ ৭২ হেক্টর ফসলি জমির ফসল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জামালপুর জেলার কৃষি উপ পরিচালক জাকিয়া সুলতানা। এদিকে দেওয়ানগঞ্জ ও ইসলামপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ নিয়েছে। উপজেলার দেড় লক্ষাধিক মানুষ পানিবন্দি হয়ে
মানবেতর জীবন যাপন করছে। বেশিরভাগ ইউনিয়নের সাথে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। উপজেলার পশ্চিমাঞ্চলের আটটি ইউনিয়নের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ইসলামপুর উপজেলার চিনাডুলী ইউনিয়নের আমতলী গ্রামের রফিকুল ইসলাম, সুলতান
মাহমুদ্, আব্দুল করিম এরা বলেন, হঠাৎ করে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাজারে পানি উঠায় বিরাট সমস্যায় পড়েছি।
ইসলামপুরের চিনাডুলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুস সালাম জানান, পুরো ইউনিয়ন বন্যায় আক্রান্ত হয়ে ২০হাজার মানুষ পানি বন্দী হয়ে পড়েছে।
রাস্তাগুলো তলিয়ে গিয়েছে। ভানবাসী মানুষ খুব কষ্টে দিন যাপন করছে।
রাতারাতি হঠাৎ করে পানি আসায় অনেকেরই জিনিষপত্র, হাঁস-মুরগী পানিতে ভেঁসে গেছে।
ইসলামপুর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মেহেদী হাসান টিটু জানান, বন্যা পরিস্থিতি ভয়াবহ রুপ ধারন করায় উপজেলার ৬০টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও
৫০টি মাধ্যমিক ও ৫টি উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পাঠদান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে।
তিনি আরও জানান, বন্যা আক্রান্তদের জন্য ১০৭টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত
রয়েছে। ১২০ মে.টন চাল ও শুকনো খাবার বিতরণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. সিরাজুল ইসলাম জানান,
প্লাবিত এলাকায় সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানশিক্ষক এবং ম্যানেজিং কমিটিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খুলে দেয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । এছাড়া চেয়ারম্যান মেম্বার ও গ্রাম পুলিশসহ মেডিকেল টীম সার্বক্ষণিক প্রস্তুত থাকা নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
অন্যদিকে, ধর্মমন্ত্রী আলহাজ্ন ফরিদুল হক খান দুলাল বন্যা পরিস্থিতি মোকাবেলায় জরুরী মত বিনিময় শেষে ইসলামপুর উপজেলার পাথর্শী ইউনিয়ন ও কুলকান্দি ইউনিয়ন বন্যা দূর্গত এলাকা পরিদর্শন ও ত্রান বিতরণ করেছেন।
এদিকে জেলা ত্রান ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, বন্যার পানির কারণে জেলায় ১শ ৫টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও ৩১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের পাঠদান বন্ধ রয়েছে।
বন্যা দুর্গতদের জন্য আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে। কয়েকশ পরিবার গবাদি পশু নিয়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রয় নিয়েছে। তিনি আরো বলেন দুর্গতদের জন্য ৩শ মেট্টিক টন
চাল ও ৪ হাজার প্যাকেট শুকনো খাবার বরাদ্দ দেয়া হয়েছে, গঠন করা হয়েছে ১১ টি মেডিকেল টিম।