Friday, 5 May 2023

রাজশাহী'র তানোরে সুরাহা হয়নি প্রতিবন্ধী নেতা ও সাংবাদিক শামসুল আলমের নির্যাতনেরঃ

রাজশাহী'র তানোরে সুরাহা হয়নি প্রতিবন্ধী নেতা ও সাংবাদিক শামসুল আলমের নির্যাতনেরঃ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

রাজশাহী জেলাধীন তানোর উপজেলার অন্তর্ভূক্ত মুণ্ডুমালায় গত ০১ ফ্রেব্রুয়ারীতে মিথ্যা অভিযোগ এনে- মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানী এবং তার দোসর বর্তমান সরকারী প্রতিকের বিরোধীতাকারী বহুল আলোচিত ও বিতর্কিত পৌর-মেয়র সাইদুরসহ তাদের সাঙ্গ পাঙ্গদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কেন্দ্রীয় নেতা ও আমাদের জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক শামসুল আলম।

তৎকালীন নির্যাতনের প্রতিবাদে সারা দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীতে আন্দোলন করেন দেশের প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণ সমূহ।

বিগত ০৪ মাস পেরিয়ে গেলেও সুরাহা হয়নি নির্যাতিত শামসুল আলমের উপর পূর্ব পরিকল্পিত নির্মম নির্যাতনের বিচারের।

বিভিন্ন স‌্যোসাল মিডিয়া, পত্রিকা ও টিভি চ্যানেলের খবরের পরিপ্রেক্ষিতে জানা যায়; চলতি বৎসরের ফ্রেব্রুয়ারী'র ০১ তারিখে "তানোরের উন্নয়ন" নামক ফেক ফেসবুক আইডিতে মুণ্ডুমালা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও সাবেক উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি গোলাম রাব্বানীর স্ত্রী ও তার ভাতিজাকে নিয়ে কে বা কারা কুরুচিপূর্ণ পোষ্ট করেন।

এতে বহুল সমালোচিত ও বিতর্কিত মেয়র সাইদুরসহ তাদের সাঙ্গ পাঙ্গদের প্ররোচণায় শামসুল আলমের পথরূদ্ধ করে অটোরিকশা থামিয়ে নির্মমভাবে রক্তাক্ত ও জখম করেন। খবর পেয়ে মুণ্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্র কর্তৃক তার স্ত্রী তাকে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।

তাৎক্ষণিক তানোর থানা অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ইসমাইল হোসেন মিয়া ও তানোর উপজেলার সাংবাদিকবৃন্দ এবং উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান লূৎফর হায়দার রশীদ ময়নাসহ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিগণ উপস্থিত হয়ে তার চিকিৎসার সুব্যবস্থা করতে কর্মরত চিকিৎসকদের অনুরোধ করেন।

অপরদিকে শামসুল আলমের নির্যাতনের অসুস্থতার রিপোর্ট যেন দুর্বল হয়; সেজন্য গোপনে নির্যাতনকারীগণ ডাক্তার, নার্সসহ সকলকে মোটা অংকের টাকা প্রদান করে এম.সি. পরিবর্তনের চেষ্টা করে।

শামসুল আলম চিকিৎসাধীন থাকায় তার স্ত্রী বাদী হয়ে ০৩/০২/২০২৩ তারিখে তানোর থানায় ০৬জনকে আসামী করে অভিযোগ দায়ের করেন।

এনিয়ে সারা দেশে নির্যাতনের খবর ছড়িয়ে পড়লে তার প্রতিবাদে উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত সুবিচার পাওয়ার জন্য প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠণ সমূহ দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচীতে মানববন্ধন, স্বারকলিপি প্রদান ও কেসের তদন্ত কর্মকর্তা পরিবর্তনের জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ ১৫টি বিভাগে ডাকযোগে স্বারকলিপি  প্রদান করেন।

এবিষয়ে নির্যাতিত শামসুল আলমের কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইলে তিনি বলেন; 

মিথ্যা অভিযোগ এনে- সরকারী বিরোধীতাকারী বিতর্কিত বর্তমান মেয়র সাইদুরসহ তাদের অসৎ সাঙ্গ পাঙ্গদের প্ররোচণায়; সাবেক মেয়র গোলাম রাব্বানীসহ মেয়র সাইদুর ও তাদের সাঙ্গ পাঙ্গদের নির্মম নির্যাতনের শিকার হয়েছি।

কেননা; সাবেক মেয়র  গোলাম রাব্বানী ১০ বৎসর মেয়র, পৌরসভা গঠণের পূর্বে পাঁচন্দর ইউপিতে ১২ বৎসর চেয়ারম্যান, তার বাবা মরহুম মোহাম্মদ আলী মাহাম ১০ বৎসর, তারা দাদা মরহুম- কবির পঞ্চায়েত ০৫ বৎসর চেয়ারম্যানের দ্বায়ীত্বে থাকাকালীন তারা পৌরসভার ০২নং ওয়ার্ড চিনাশো গ্রামসহ অন্যান্য ওয়ার্ডগুলিতে দৃশ্যমান তেমন কোন উন্নয়ন না করে- সাংসদ হওয়ার খোয়াবে পৌর-বাজেটের টাকা অহেতুক সাংসদীয় এলাকায় খরচ করেন। এদিকে আমি ও আমার মা হুইলচেয়ার ব্যবহারকারী প্রতিবন্ধী। ভাঙ্গা-চুরা রাস্তা দিয়ে বাড়ী থেকে বের হওয়া আমাদের অসাধ্য ও বর্ষাকালে রাস্তা কর্দময় থাকায় এবং গ্রামের প্রধান রাস্তার পার্শ্বে ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সকল ধরনের গাড়ীঘোড়াসহ মানুষ চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়ার ভিডিও চিত্র স্যোসাল মিডিয়ায় প্রকাশ করায়; তাদের ক্ষোভের বশিভুত হয়ে প্রতিহিংসা বশতঃ আমার উপর মিথ্যা অভিযোগ এনে- নির্যাতন করেন।

তারাই নিজেদের লোকদ্বারা ফেসবুক ফেক আইডিতে পোষ্ট দিয়ে আমাকে সামাজিক ও সাংগঠণিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন করতে অপকৌশল তৈরী করেছেন।

অপরদিকে ফেসবুক ফেক আইডিতে পোষ্টের উপরে আইননত কোন ব্যবস্থা না নিয়ে, উল্টো আমার কেসের তদন্ত কর্মকর্তাকে আসামীগণ মোটা অংকের উৎকোচের মাধ্যমে প্রভাবিত করে- কেসের চার্জসিট কোর্টে জমা না দিতে সময় কালক্ষেপণ করাচ্ছেন।

এবিষয়ে প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের কেন্দ্রীয় কমিটির 'জাতীয় তৃণমূল প্রতিবন্ধী সংস্থা'র সাধারণ সম্পাদক ও নাটোর জেলা 'নন্দন জেলা প্রতিবন্ধী সংস্থা'র সভাপতি- জাহাঙ্গীর আলম রাজুর কাছে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে চাইলে তিনি উদ্বেগ ও ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন;

মিথ্যা অভিযোগ এনে- আমাদের কেন্দ্রীয় নেতা শামসুল আলমের উপর যারা নির্যাতন করেছেন; তাদের প্রতি দেশের এককোটি আশিলক্ষ প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের পক্ষ থেকে ঘৃণাভরে প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায়!

কেননা; তারা দেশের আইনের উপর শ্রদ্ধাশীল ও আস্থাশীল নয়!

যদি তারা দেশের আইনের উপর শ্রদ্ধা ও আস্থাশীল হতো- তাহলে তারা রক্ষক হয়ে ভক্ষক নাহয়ে- প্রকৃত অপরাধীকে সাইবার ক্রাইম ট্রাইব্যুনালের মাধ্যমে চিহ্নিত করতঃ আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারতেন, তাতে যদি শামসুল আলম প্রকৃত অপরাধী হতেন; তাহলে আইনত তার ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বা নির্যাতন করাটাকে মেনে নেয়া যেত!

এবিষয়ে তানোর থানা অফিসার ইনচার্জ ইসমাইল হোসেন মিয়া সত্যতা শিকার করে বলেন; আমি শামসুল আলমের নির্যাতনের দিন হতে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বশরীরে নিয়োমিত খোঁজ-খবর নিয়েছি এবং তার স্ত্রীর অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ও প্রত্যাক্ষ ভাবে স্বচোক্ষে ক্ষত-বিক্ষতের আঘাতের প্রেক্ষিতে কেসের ধারা নির্ধারন করে কোর্টে প্রেরণ করেছিলাম, যার কারণে কেসের ধারার উপর ভিত্তি করে আসামীগণ নিম্ন আদালতে জামিন না পেয়ে ০৬ সপ্তাহের জন্য ঢাকা হাইকোর্ট হতে জামিন নিয়েছিলেন। 

ঘটনাটি যেহেতু মুণ্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের আওতায়, সেহেতু মুণ্ডুমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের এসআই মোজাহারুলের উপর তদন্তভার দেওয়া হয়েছে। তিনি চার্জসিট তৈরী করে এডিসনাল এসপি মহোদয়ের কাছে পাঠিয়েছেন।।